‘জয় শ্রীরাম’ না বলায় গণপিটুনি! ওড়িশায় খুন মুর্শিদাবাদের শ্রমিক জুয়েল
‘জয় শ্রীরাম’ না বলায় প্রাণ দিতে হলো বাংলার এক পরিযায়ী শ্রমিককে। ভিন রাজ্যে গণপিটুনির শিকার হয়ে মর্মান্তিক মৃত্যু হলো মুর্শিদাবাদের যুবক জুয়েল রানার। ঘটনাটি ঘটেছে ওড়িশার সম্বলপুর জেলার শান্তিনগর এলাকায়। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে শোকস্তব্ধ গোটা বাংলা।
নিহত জুয়েল রানার বাড়ি মুর্শিদাবাদের সুতি ১ নম্বর ব্লকের চক বাহাদুরপুর গ্রামে। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রাজমিস্ত্রির কাজ করে সংসার চালাতেন তিনি। জীবিকার তাগিদে বেশ কিছুদিন আগে কাজের সন্ধানে ওড়িশায় যান জুয়েল।
অভিযোগ, কাজ শেষে রাতে রান্নার প্রস্তুতির সময় হঠাৎই একদল উগ্র মানসিকতার মানুষ তাঁকে ঘিরে ধরে। জোর করে তাঁকে ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে বাধ্য করার চেষ্টা করা হয়। জুয়েল স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, তিনি একজন বাঙালি এবং তিনি এই ধ্বনি দেবেন না।
এই প্রতিবাদ সহ্য করতে না পেরে উন্মত্ত জনতা লাঠি ও রড নিয়ে তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। সহকর্মীদের চোখের সামনেই চলে পাশবিক অত্যাচার। গুরুতর জখম অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন জুয়েল। পরে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।
এই ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন জুয়েলের দুই সঙ্গী সানোয়ার হোসেন ও আতিউর রহমান। তাঁদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
এই মর্মান্তিক ঘটনা ওড়িশায় কর্মরত বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। আতঙ্কে রয়েছেন ভিন রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া বহু শ্রমিক।
পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি জুয়েলের মায়ের চোখের অপারেশন হয়েছিল। মাকে আর বিড়ি বাঁধতে দেবেন না—এই স্বপ্ন নিয়েই ভিন রাজ্যে কঠোর পরিশ্রম করতে গিয়েছিলেন জুয়েল। কিন্তু সেই আদরের ছেলে আজ ফিরছে নিথর দেহ হয়ে।
সংসারের একমাত্র উপার্জনকারীর মৃত্যুতে চক বাহাদুরপুরের ছোট্ট পরিবারটি এখন সম্পূর্ণ দিশেহারা। এলাকায় নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া।
বিউরো রিপোর্ট — আজকের মিডিয়া
